Facebook
Twitter
LinkedIn

নারায়ণগঞ্জের হেফাজতে ইসলাম নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে পুলিশি হেফাজতে। মাত্র ৫৫ বছর বয়স ছিল তাঁর। যদি তাঁকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়, যদি তিনি সুচিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন তবে এটি অবশ্যই সমালোচনার যোগ্য। এই হেফাজত নেতার রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই সোচ্চার হতে হবে। আজকে যদি ফরহাদ মজহার কিংবা ব্যারিস্টার তুহিন মালিক পুলিশি হেফাজতে থাকতেন এবং তাদের মৃত্যু হতো তাহলে আমরা যারা মুক্তচিন্তা ও মানবাধিকারের কথা বলি তারা কি নিন্দা করতাম না? অবশ্যই করতাম। কিন্তু একজন মসজিদের ইমাম বা হেফাজতে ইসলামের নেতা হওয়ার কারণে আমাদের পক্ষ থেকে মাওলানা ইকবাল হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিবাদ হয়নি। কিন্তু নিন্দা-প্রতিবাদ করেছে কে? করেছে ফরহাদ মজহার। করেছে আরো এরকম অনেক ‘বামায়াতে ইসলামীর’ লোকজন।

আমি ফরহাদ মজহারের ভন্ডামি দেখে অবাক হইনা, কারণ সেই পিকিংপন্থী মাওলানা ভাসানী থেকে শুরু করে এখনকার বেইজিংপন্থী ফরহাদ মজহার যে একই চরিত্রের হবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি কেবল অবাক হই সেইসব মানুষ দেখে যারা কেবলমাত্র পোশাক আর পেশা দিয়ে মানুষকে বিচার করে। দাড়ি-টুপিবিহীন ফরহাদ মজহার কিংবা দাড়ি-টুপিহীন আসিফ নজরুলকে গ্রেপ্তার করলে বা নির্যাতন করলে যাদের মানবতার টনক নড়ে কিন্তু দাড়ি-টুপিওয়ালা হুজুরদের নির্যাতন করলে যাদের মানবতার টনক নড়ে না তাঁরা কি ধর্মান্ধদের চেয়ে খুব বেশি আলাদা?

আমাকে আপনারা বলুন তো, হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হক ভট্টাচার্যের সাথে ফরহাদ মজহারের চিন্তাগত কোন পার্থক্য আছে কি? মাওলানা ইকবাল হোসেনের চিন্তার সাথে অধ্যাপক আসিফ নজরুলের ভাবনা-চিন্তার কোন পার্থক্য আছে কি? তেমন পার্থক্য নেই। লক্ষীপুরের তাহের কিংবা নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান এদের চিন্তার সাথে মাওলানাদের চিন্তার কি খুব বেশি পার্থক্য? যদি আসিফ নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়, নির্যাতন করা হয় এবং সেজন্য তার মৃত্যু হয় তবে এমন কোন নাস্তিক পাওয়া যাবে না যে এর নিন্দা করবে না। কিন্তু যখন জেলখানায় রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মাওলানা ইকবাল হোসেনের মৃত্যু হল তখন কি শাহবাগে একটা জমায়েত হতে পারল না? রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার হতে পারলাম না? কিশোর এবং কাজলের জন্য আমরা যতটা সোচ্চার থেকেছি মাওলানা ইকবাল হোসেনের জন্য কি ততটা সোচ্চার হয়েছি? মাওলানা বলে কি তাঁর প্রাণের কোন দাম নেই? মাদ্রাসায় পড়েছেন বলে কি তিনি ফেলনা? দাড়ি-টুপি পরিধান করে ইসলামিক জিহাদ করেছেন বলে কি তাঁর মানবাধিকার থাকতে নেই? কিন্তু দাড়ি-টুপি ছাড়া জিহাদী মাহমুদুর রহমান, দাড়ি-টুপি ছাড়া জিহাদী তুহিন মালিকদের মানবাধিকার থাকতে হয়, তাইতো?

আমি এখানে কেবল মানবতার কথাই বলতে এসেছি। মানবতার কথাই বলে যেতে চাই। আর যদি সত্যিই আমরা মানবতার কথা বলি তাহলে আমাদের মানবতা যেন সিলেক্টিভ হয়ে না যায়, ঠিক ধর্মবিশ্বাসীদের মতই। যদি মামুনুল হক ভট্টাচার্যকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয় আমি তবে তারও নিন্দা করি, কিন্তু একই সাথে মামুনুল হক ভট্টাচার্যের সন্ত্রাস, অরাজকতা, পরকীয়া, ভন্ডামি, আর্থিক দুর্নীতি এসব কিছুর বিরুদ্ধেও আমি কথা বলি। যে মাহমুদুল হাসান গুনভী এবং ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী বাংলাদেশের নাস্তিক, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়েছেন, তাদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের মাথা কেটে ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন তাদেরও মানবাধিকার আছে এটা আমি মনে করি। আবার ভেবে বসবেন না যে, তাদের মানবাধিকার আছে মানে আমি তাদের অপরাধীদেরও কারামুক্তি চাইছি! তাঁরা মানে না যে, আমাদের প্রাণের, মতামতের, ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্য আছে কিন্তু আমরা তাদের প্রাণ, মতামত ও ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্য আছে তা মেনে নিই। আর এখানেই পার্থক্য মানবাধিকার ও ইসলামাধিকারের মধ্যে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
একটি গল্প দিয়ে শুরু করা যাক: একজন লোক তার বাড়িতে একটি কুয়ো খনন করলো। সে কুয়ো থেকে তার খাবার পানি, গোসলের পানি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পানীয় প্রয়োজন মেটাতে লাগলো। লোকটার বাড়িতে একটি কাঁচা পায়খানা ছিল। সে পায়খানার লাইনটা একটি পাইপের মাধ্যমে কুয়োর মধ্যে প্রবেশ করানো ছিল। ভদ্রলোক যতবারই কুয়ো থেকে পানি তোলে প্রতিবারই পানির মধ্যে সে মলমূত্র দেখতে পায়। আর এই পানি খেয়ে পরিবারের সবাই বারবার অসুস্থ হয়। সবসময়ই পরিবারের সবার ডায়রিয়া লেগে থাকে। ডাক্তার দেখায়, ওষুধ খায় কিন্তু তাতেও ডায়রিয়া সারে না। ভদ্রলোক কুয়োর মধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ফিটকিরি ইত্যাদি দিতে লাগল প্রচুর পরিমাণে; কিন্তু তাতেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না।

একবার পেডরোলো পাম্প মেশিন দিয়ে কুয়োর সব জল সে তুলে ফেলল, এরপর মিনারেল ওয়াটার দিয়ে সে পুরো কুয়ো ভরে ফেলল। সে মনে মনে খুশি হল যে, এবার ভালো পানি আসবে বোধহয়। কিন্তু আবারও তথৈবচ, কোন পরিবর্তন নেই! কারণ তাঁর পায়খানার পাইপটা এখনও কুয়োর মধ্যেই ঢোকানো আছে! সে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছে, কিভাবে কুয়োর জল বিশুদ্ধ করা যায়। কেউ তাকে বলছে ওর মধ্যে ব্লিচিং পাউডার দিতে, কেউ বলছে ফিটকিরি ঢালতে, কেউ বলছে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট দিতে। সে প্রত্যেকের কথাই মানছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

কয়েকজন জ্ঞানী লোক তাকে বলল, আরে মিয়া তুমি কেন বোঝনা, তোমার এবং তোমার পরিবারের কাঁচা হাগুমুতু গিয়ে কুয়োয় পড়ছে? আগে পায়খানার লাইনটা সেখান থেকে সরাও। লোকটির এই পরামর্শটা পছন্দ হয়নি, সে এই একটা পরামর্শটা শুনলে বরং প্রচন্ড ক্ষেপে যায়! শুধু ক্ষেপেই যায় না, এধরনের পরামর্শ কেউ দিলে সে তেড়ে যায় তাকে মারার জন্য। সে কোনোভাবেই কুয়ো থেকে পায়খানার পাইপটা সরাতে রাজি না।

মোরাল অব দ্যা স্টোরি : বাংলাদেশে নারী নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নারী নির্যাতন যে আগে ছিল না তা নয়। আজকে যতটুকু নারী নির্যাতন হচ্ছে আগে এরকমই হতো। আজ যে পরিমাণ ধর্ষণ হচ্ছে আগে সে পরিমাণেই ধর্ষণ হতো। আজ যে পরিমাণ খুন হচ্ছে আগে সেরকমই খুন হতো। সে যুগে মিডিয়ার দাপট না থাকায় সে সময়ের অনেক খবরই পাদপ্রদীপের আড়ালে চলে গেছে। একসময় বাংলাদেশে নারী প্রধানমন্ত্রী এলো। বাংলাদেশের অনেক সেক্যুলার মানুষই তখন আশায় বুক বাঁধলো- এবার বোধহয় নারী নির্যাতন বন্ধ হবে, এবার বোধহয় ধর্ষণ বন্ধ হবে। বাংলাদেশের প্রায় উনত্রিশ বছর ধরে ঘুরেফিরে দুজন নারীই প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করছেন, অথচ এ দুজন নারী প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে নারীদের কোন মুক্তি আসেনি। কারণ এ দুজন নারী প্রধানমন্ত্রী মূলত পুরুষতন্ত্রেরই প্রতিনিধি, এবং পুরুষের বিকল্প। তারা দু’জনের কেউই স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে রাজনীতি করে ক্ষমতায় আসেনি। তারা শুধুই পুরুষের বিকল্প। ভারপ্রাপ্ত নেতার মতোই তারা ‘ভারপ্রাপ্ত পুরুষ’ হয়ে দেশ চালাচ্ছে। আর তাই ভারপ্রাপ্ত পুরুষের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের যে আশা করেছিল নারীরা, সেই আশার পুরোটায়ই গুড়েবালি।

আর সবচেয়ে বড় কথা, দেশের জনগণ সবাই কুয়ো থেকে বিশুদ্ধ জল চায়, পরিবারের সবার সুস্থ জীবন চায় কিন্তু তারা ধর্ম নামক পায়খানার পাইপ রাষ্ট্র থেকে পৃথক করছে না। ধর্ম নামক পায়খানার পাইপ পৃথক না করলে মলমূত্র তো দিনে দিনে বাড়তে বাড়তে পুরো কুয়োটাই ভরে ফেলবে। তাই নয় কি? এবং বাংলাদেশের কি তাইই হয়নি? দু’জন নারী প্রধানমন্ত্রীর লাগাতার শাসন এবং শোষণে দেশে নারী নির্যাতন বন্ধ না হয়ে, ধর্ষণ বন্ধ না হয়ে বেড়ে গেছে বোরকা! আগে কুয়ো (রাষ্ট্র) থেকে পায়খানার (ধর্মের) পাইপ পৃথক করুন, তারপর দেখুন রোগের নিরাময় হয় কিনা। পায়খানা (ধর্ম) পায়খানার জায়গায় (ধর্মালয়ে) থাকুক। কুয়ো (রাষ্ট্র) কুয়োর জায়গায় (ধর্মনিরপেক্ষতায়) থাকুক।

Facebook
Twitter
LinkedIn

দৃশ্য- ১: ভেনেজুয়েলায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। আমেরিকা বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নগ্ন হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে কলকাতার রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাম জোটের কর্মীরা। একজনকে জিজ্ঞেস করা হলো : কোথায় ভেনেজুয়েলা, কোথায় ভারত! আপনি কেন সে দেশের ঘটমান বিষয় নিয়ে এখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন?
উত্তর : আমরা কোন নির্দিষ্ট দেশ, সীমানার ভিত্তিতে মানবাধিকারের বিচার করি না। পৃথিবীর যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, মানবতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয় আমরা তারই প্রতিবাদ করি।

দৃশ্য- ২: পাকিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জুনায়েদকে ফেসবুকে ইসলাম বিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছে। একই বাম ভাইয়ের সাথে দেখা। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো : এই সভ্য পৃথিবীতে শুধুমাত্র ইসলামের বিরুদ্ধে পোস্ট করার অভিযোগে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যায়? আপনারা কেন এর প্রতিবাদ করছেন না?
উত্তর : ওটা পাকিস্তানের বিষয়। তাছাড়া এই মুহূর্তে ভারতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা ব্যস্ত আছি। ভারতকে রামরাজ্য গড়ার চেষ্টা করছে মোদি। এটা কিছুতেই হতে দেয়া যায় না!

দৃশ্য- ৩: ইসলামিক জনসভায় মাওলানা মামুনুল হক সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন : ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে নাস্তিকদের ঠাঁই নাই! ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামী আইন চাই!
দৃশ্য – ৪ : ইসলামিক জনসভায় মাওলানা মামুনুল হক সাহেব গর্জে উঠলেন : ভারতকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা সফল হতে দেয়া যাবে না! ভারতকে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষতা ধরে রাখতে হবে, নয়তো আমরা ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ব!

বি: দ্র: আকাশে আজ পিনপতন নিরবতা।

Facebook
Twitter
LinkedIn

কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশের শিয়া কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াসিম রিজভী কোরআনের ২৬টি আয়াত বাতিলের আবেদন জানিয়ে ভারতের সুপ্রিমকোর্টে একটি রিট দায়ের করছেন। রিটে তিনি সহিংসতায় প্ররোচনা দেয় এমন অভিযোগ এনে কোরআনের ২৬টি আয়াত নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তবে গত ১২ ই এপ্রিল ২০২১-এ রিজভীর রিট খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টের ভাষ্য অনুযায়ী এরকম একটি ‘সম্পূর্ণ অর্থহীন’ পিটিশন দাখিল করার জন্য আবেদনকারী সৈয়দ ওয়াসিম রিজভির ৫০,০০০ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। (তথ্যসূত্রঃ https://www.bbc.com/bengali/news-56602386)

চলুন দেখা যাক ঐ ২৬ টি আয়াতে কি আছে। তারপর ওয়াসিম রিজভির দাবি সত্য কি মিথ্যা সেটি যাচাইয়ের ভার আপনার উপরঃ
১) সূরা আল বাক্বারাহ, আয়াত নং : 191
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ وَلاَ تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّى يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ كَذَلِكَ جَزَاء الْكَافِرِينَ
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
And slay them wherever ye catch them, and turn them out from where they have Turned you out; for tumult and oppression are worse than slaughter; but fight them not at the Sacred Mosque, unless they (first) fight you there; but if they fight you, slay them. Such is the reward of those who suppress faith.

২) সূরা আল ইমরান, আয়াত : 151
سَنُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُواْ الرُّعْبَ بِمَا أَشْرَكُواْ بِاللّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَمَأْوَاهُمُ النَّارُ وَبِئْسَ مَثْوَى الظَّالِمِينَ
খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো। কারণ, ওরা আল্লাহর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে যে সম্পর্কে কোন সনদ অবতীর্ণ করা হয়নি। আর ওদের ঠিকানা হলো দোযখের আগুন। বস্তুতঃ জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।
Soon shall We cast terror into the hearts of the Unbelievers, for that they joined companions with Allah, for which He had sent no authority: their abode will be the Fire: And evil is the home of the wrong-doers!

৩) সূরা আন নিসা, আয়াত 56
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِآيَاتِنَا سَوْفَ نُصْلِيهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُمْ بَدَّلْنَاهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُواْ الْعَذَابَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيمًا
এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শন সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী।
Those who reject our Signs, We shall soon cast into the Fire: as often as their skins are roasted through, We shall change them for fresh skins, that they may taste the penalty: for Allah is Exalted in Power, Wise.

৪) সূরা আন নিসা, আয়াত 89
وَدُّواْ لَوْ تَكْفُرُونَ كَمَا كَفَرُواْ فَتَكُونُونَ سَوَاء فَلاَ تَتَّخِذُواْ مِنْهُمْ أَوْلِيَاء حَتَّىَ يُهَاجِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ فَإِن تَوَلَّوْاْ فَخُذُوهُمْ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ وَجَدتَّمُوهُمْ وَلاَ تَتَّخِذُواْ مِنْهُمْ وَلِيًّا وَلاَ نَصِيرًا
তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।
They but wish that ye should reject Faith, as they do, and thus be on the same footing (as they): But take not friends from their ranks until they flee in the way of Allah (From what is forbidden). But if they turn renegades, seize them and slay them wherever ye find them; and (in any case) take no friends or helpers from their ranks;-

৫) সূরা আন নিসা, আয়াত 111
وَمَن يَكْسِبْ إِثْمًا فَإِنَّمَا يَكْسِبُهُ عَلَى نَفْسِهِ وَكَانَ اللّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
যে কেউ পাপ করে, সে নিজের পক্ষেই করে। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
And if any one earns sin. he earns it against His own soul: for Allah is full of knowledge and wisdom.

৬) সূরা আল মায়েদাহ, আয়াত 14
وَمِنَ الَّذِينَ قَالُواْ إِنَّا نَصَارَى أَخَذْنَا مِيثَاقَهُمْ فَنَسُواْ حَظًّا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِ فَأَغْرَيْنَا بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاء إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَسَوْفَ يُنَبِّئُهُمُ اللّهُ بِمَا كَانُواْ يَصْنَعُونَ
যারা বলেঃ আমরা নাছারা, আমি তাদের কাছ থেকেও তাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম। অতঃপর তারাও যে উপদেশ প্রাপ্ত হয়েছিল, তা থেকে উপকার লাভ করা ভুলে গেল। অতঃপর আমি কেয়ামত পর্যন্ত তাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। অবশেষে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন।
From those, too, who call themselves Christians, We did take a covenant, but they forgot a good part of the message that was sent them: so we estranged them, with enmity and hatred between the one and the other, to the day of judgment. And soon will Allah show them what it is they have done.

৭) সূরা আল মায়িদাহ, আয়াত 51
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاء بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
O ye who believe! take not the Jews and the Christians for your friends and protectors: They are but friends and protectors to each other. And he amongst you that turns to them (for friendship) is of them. Verily Allah guideth not a people unjust.

৮) সূরা আল মায়িদাহ, আয়াত 57
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِّنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও।
O ye who believe! take not for friends and protectors those who take your religion for a mockery or sport,- whether among those who received the Scripture before you, or among those who reject Faith; but fear ye Allah, if ye have faith (indeed).

৯) সূরা আল-আনফাল, আয়াত 65
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُواْ مِئَتَيْنِ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّئَةٌ يَغْلِبُواْ أَلْفًا مِّنَ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لاَّ يَفْقَهُونَ
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন।
O Messenger. rouse the Believers to the fight. If there are twenty amongst you, patient and persevering, they will vanquish two hundred: if a hundred, they will vanquish a thousand of the Unbelievers: for these are a people without understanding.

১০) সূরা আল আনফাল, আয়াত 69
فَكُلُواْ مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلاَلاً طَيِّبًا وَاتَّقُواْ اللّهَ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।
But (now) enjoy what ye took in war, lawful and good: but fear Allah. for Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.

১১) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত ০৫
فَإِذَا انسَلَخَ الأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُواْ الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدتُّمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُواْ لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ الصَّلاَةَ وَآتَوُاْ الزَّكَاةَ فَخَلُّواْ سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
But when the forbidden months are past, then fight and slay the Pagans wherever ye find them, an seize them, beleaguer them, and lie in wait for them in every stratagem (of war); but if they repent, and establish regular prayers and practise regular charity, then open the way for them: for Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.

১২) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 14
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।
Fight them, and Allah will punish them by your hands, cover them with shame, help you (to victory) over them, heal the breasts of Believers,

১৩) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 23
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ آبَاءكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاء إَنِ اسْتَحَبُّواْ الْكُفْرَ عَلَى الإِيمَانِ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে। আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা সীমালংঘনকারী।
O ye who believe! take not for protectors your fathers and your brothers if they love infidelity above Faith: if any of you do so, they do wrong.

১৪) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 28
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ فَلاَ يَقْرَبُواْ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَـذَا وَإِنْ خِفْتُمْ عَيْلَةً فَسَوْفَ يُغْنِيكُمُ اللّهُ مِن فَضْلِهِ إِن شَاء إِنَّ اللّهَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রেøর আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
O ye who believe! Truly the Pagans are unclean; so let them not, after this year of theirs, approach the Sacred Mosque. And if ye fear poverty, soon will Allah enrich you, if He wills, out of His bounty, for Allah is All-knowing, All-wise.

১৫) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 29
قَاتِلُواْ الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَلاَ بِالْيَوْمِ الآخِرِ وَلاَ يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَلاَ يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُواْ الْجِزْيَةَ عَن يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ
তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।
Fight those who believe not in Allah nor the Last Day, nor hold that forbidden which hath been forbidden by Allah and His Messenger, nor acknowledge the religion of Truth, (even if they are) of the People of the Book, until they pay the Jizya with willing submission, and feel themselves subdued.

১৬) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 37
إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُواْ يُحِلِّونَهُ عَامًا وَيُحَرِّمُونَهُ عَامًا لِّيُوَاطِؤُواْ عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللّهُ فَيُحِلُّواْ مَا حَرَّمَ اللّهُ زُيِّنَ لَهُمْ سُوءُ أَعْمَالِهِمْ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
এই মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ কেবল কুফরীর মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফেরগণ গোমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা গণনা পূর্ণ করে নেয় আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলোর। অতঃপর হালাল করে নেয় আল্লাহর হারামকৃত মাসগুলোকে। তাদের মন্দকাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হল। আর আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না।
Verily the transposing (of a prohibited month) is an addition to Unbelief: the Unbelievers are led to wrong thereby: for they make it lawful one year, and forbidden another year, in order to adjust the number of months forbidden by Allah and make such forbidden ones lawful. The evil of their course seems pleasing to them. But Allah guideth not those who reject Faith.

১৭) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 58
وَمِنْهُم مَّن يَلْمِزُكَ فِي الصَّدَقَاتِ فَإِنْ أُعْطُواْ مِنْهَا رَضُواْ وَإِن لَّمْ يُعْطَوْاْ مِنهَا إِذَا هُمْ يَسْخَطُونَ
তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা সদকা বন্টনে আপনাকে দোষারূপ করে। এর থেকে কিছু পেলে সন্তুষ্ট হয় এবং না পেলে বিক্ষুব্ধ হয়।
And among them are men who slander thee in the matter of (the distribution of) the alms: if they are given part thereof, they are pleased, but if not, behold! they are indignant!

১৮) সূরা আত তাওবাহ, আয়াত 111
إِنَّ اللّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللّهِ فَاسْتَبْشِرُواْ بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য।
Allah hath purchased of the believers their persons and their goods; for theirs (in return) is the garden (of Paradise): they fight in His cause, and slay and are slain: a promise binding on Him in truth, through the Law, the Gospel, and the Qur’an: and who is more faithful to his covenant than Allah. then rejoice in the bargain which ye have concluded: that is the achievement supreme.

১৯) সুরা আত তাওবাহ, আয়াত 123
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ قَاتِلُواْ الَّذِينَ يَلُونَكُم مِّنَ الْكُفَّارِ وَلِيَجِدُواْ فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
O ye who believe! fight the unbelievers who gird you about, and let them find firmness in you: and know that Allah is with those who fear Him.

২০) সূরা আম্বিয়া, আয়াত 98
إِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ أَنتُمْ لَهَا وَارِدُونَ
তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের পুজা কর, সেগুলো দোযখের ইন্ধন। তোমরাই তাতে প্রবেশ করবে।
Verily ye, (unbelievers), and the (false) gods that ye worship besides Allah, are (but) fuel for Hell! to it will ye (surely) come!

২১) সূরা সাজদাহ, আয়াত 22
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِآيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنتَقِمُونَ
যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব।
And who does more wrong than one to whom are recited the Signs of his Lord, and who then turns away therefrom? Verily from those who transgress We shall exact (due) Retribution.

২২) সূরা আল আহযাব, আয়াত 61
مَلْعُونِينَ أَيْنَمَا ثُقِفُوا أُخِذُوا وَقُتِّلُوا تَقْتِيلًا
অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরা হবে এবং প্রাণে বধ করা হবে।
They shall have a curse on them: whenever they are found, they shall be seized and slain (without mercy).

২৩) সূরা হা-মীম সাজদাহ, আয়াত 27
فَلَنُذِيقَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا عَذَابًا شَدِيدًا وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَسْوَأَ الَّذِي كَانُوا يَعْمَلُونَ
আমি অবশ্যই কাফেরদেরকে কঠিন আযাব আস্বাদন করাব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে তাদের মন্দ ও হীন কাজের প্রতিফল দেব।
But We will certainly give the Unbelievers a taste of a severe Penalty, and We will requite them for the worst of their deeds.

২৪) সূরা হা-মীম সাজদাহ, আয়াত 28
ذَلِكَ جَزَاء أَعْدَاء اللَّهِ النَّارُ لَهُمْ فِيهَا دَارُ الْخُلْدِ جَزَاء بِمَا كَانُوا بِآيَاتِنَا يَجْحَدُونَ
এটা আল্লাহর শত্রুদের শাস্তি-জাহান্নাম। তাতে তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করার প্রতিফলস্বরূপ।
Such is the requital of the enemies of Allah,- the Fire: therein will be for them the Eternal Home: a (fit) requital, for that they were wont to reject Our Sings.

২৫) সূরা আল ফাতহ, আয়াত 20
وَعَدَكُمُ اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَذِهِ وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেন। তিনি তোমাদের থেকে শত্রুদের স্তব্দ করে দিয়েছেন-যাতে এটা মুমিনদের জন্যে এক নিদর্শন হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
Allah has promised you many gains that ye shall acquire, and He has given you these beforehand; and He has restrained the hands of men from you; that it may be a Sign for the Believers, and that He may guide you to a Straight Path;

২৬) সূরা আত-তাহরীম, আয়াত 09
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
O Prophet! Strive hard against the Unbelievers and the Hypocrites, and be firm against them. Their abode is Hell,- an evil refuge (indeed).

নোটঃ এমন শতশত ভালোবাসা ও মানবিকতাপূর্ণ (?) আয়াত দিয়ে ভরে আছে ইসলামের মহা পবিত্র গ্রন্থ কোরআন!

Facebook
Twitter
LinkedIn

আলোচনার শুরুতেই নারীর প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ হওয়া দরকার। ইসলাম নারীকে পূর্ণ মানুষের মর্যাদা দেয় কিনা সেটি আমাদের জানতে হবে। তারপর জানতে হবে ইসলাম নারীর প্রতি কি কি নির্দেশনা দিয়েছে, এবং নারীর সাথে কেমন আচরণ করার জন্য পুরুষকে নির্দেশ দিয়েছে। একজন মুসলিম নারীকে স্বাবলম্বী হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় কিনা সেটিও আলোচনা হবে।
নারী বনাম মানুষঃ ইসলাম প্রেক্ষিত
ইসলাম নারীকে দুনিয়ার সেরা ভোগ্যপণ্য আখ্যা দিয়েছে, এবং এটি যদুমধু মার্কা কোন হুজুরের বক্তব্য না বরং ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ নিজেই নারীকে এভাবে সম্মানিত করেছেন। মোহাম্মদ বলেছেন: দুনিয়া হচ্ছে ভোগের উপকরণ এবং দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ উপভোগ্য বস্তু হচ্ছে পুণ্যবতী নারী। (মুসলিম : ১৪৬৭)
নারীকে পণ্যের মর্যাদা দিলেও যেহেতু শ্রেষ্ঠ পণ্যের মর্যাদা দিয়েছে তাই এটি নিয়ে যদি কোনো হিজাবি অথবা বোরকাওয়ালী খুশি থাকতে চায় তবে সেটা তার ব্যাপার।
এবারের শ্রেষ্ঠ পণ্যের সাথে পণ্যের মালিক মুসলিম পুরুষদের কি আচরণ করতে বলেছে ইসলাম সেটি চলুন দেখে নেয়া যাক। সহীহ আল-মুসলিম এর এই হাদিসটি পড়ুনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “নারী পাঁজরের হাড়ের ন্যায় (বাঁকা)। যখন তুমি তাকে সোজা করতে যাবে তখন তা ভেঙ্গে ফেলবে আর তার মাঝে বক্রতা রেখে দিয়েই তা দিয়ে তুমি উপকার হাসিল করবে” (বোখারি : ৩৩৩১) নারী যেহেতু বাঁকা বস্তু আর বাঁকা বস্তু বেশি সোজা করতে চাইলে ভেঙে যাওয়ার ভয় আছে তাই ইসলাম নারীর সাথে সদাচারণ করারও নির্দেশ দিয়েছে, কোরআনের সূরা আন নিসা’র ১৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে “তোমরা তাহাদিগের সাথে উত্তম আচরণ করো।”
আজকালকার যুগে আমরা একদল রসালো ধার্মিক দেখতে পাই যারা রেস্টুরেন্টে গিয়ে রেড ওয়াইনের পাশাপাশি ‘হালাল মাংসের’ খোঁজ করে! এই রসালো ধার্মিকেরাই সিনেমা হল চালু করার সময় হুজুর ডেকে দোয়া করায় যেন আল্লাহর রহমতে সিনেমা হলের ব্যবসা ভালো হয়। ছোটকালে একটা গল্প শুনেছিলামঃ এক মুসল্লি হুজুরের কাছে ওয়াজ শুনেছে, নামাজ পড়ার সময় মাথায় পাগড়ি পরা সুন্নত। এরপর মুসল্লী বেচারা নামাজ পড়তে গেছে। পাগড়ি পরার মতো বাড়তি কাপড় তার ছিল না, অগত্যা সে নিজের লুঙ্গিটা খুলে পাগড়ি হিসেবে মাথায় বেঁধে তারপরে নামাজে দাড়িয়ে গেল! আমি রসালো ধার্মিকদেরকে এই লুঙ্গি খুলে পাগড়ি বাধা মুসল্লির সাথেই তুলনা করতে পছন্দ করি। রসালো ধার্মিকদের মধ্যে আবার দুই শ্রেণি: একদল জেনেবুঝে ধার্মিক সেজে লোকদের ধোঁকা দেয়, আরেকদল হচ্ছে ‘যদি ইসলাম জেনে যাই তাহলে তো আর স্বার্থ উদ্ধার হবে না’ ভেবে নিজেকে এবং অন্যকে ধোঁকা দেয়।
রসালো ধার্মিকেরা ইসলাম পালন করে নিজেদের স্বার্থের অনুপাতে। তারা কোরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যা নিজের বেলায় একরকম আর অন্যদের বেলায় আরেকরকম করতে বেশ পারঙ্গম। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক আমেরিকার সিনেটর ইলহান ওমরের কথা। ভদ্রমহিলা মাথায় হিজাব পরে রাজনীতি করেন, ইসলামের গুণকীর্তনও করেন অথচ তিনি কি জানেন না ইসলাম তাকে রাজনীতি করার অনুমতি দেয় না? তিনি এটা জানেন, কিন্তু এটিই তো হচ্ছে তার রসালো ধার্মিকতার পরিচয়। ইসলাম একজন নারীকে বিয়ের আগে তার পিতার দায়িত্বে রাখে আর বিয়ের পর বরের দায়িত্বে রাখে। ইসলাম সবসময়ই নারীকে তাঁর বাবা কিংবা ভাই কিংবা দাদা কিংবা বর (লোকেরা স্বামী বললেও আমি সচেতনভাবে এ শব্দটি এড়িয়ে চলি) এরকম কোন পুরুষের তত্ত্বাবধানেই থাকতে বলে বা থাকার নির্দেশ দেয়। এজন্যই একজন বিবাহিত নারীকে তার ঘর থেকে বরের পারমিশন ছাড়া বের হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না, রাজনীতি কিংবা চাকরি তো দূর অস্ত। ভারতের দেওবন্দ ঘরানার প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আশরাফ আলী থানভী স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য শিরোনামে স্ত্রীদের দায়-দায়িত্ব লিখেছেন তার বইয়ে। চলুন দেখে আসি কি কি দায়িত্ব :
১) যথাযথভাবে স্বামীর প্রতি অনুগত থাকা, আদব বজায় রাখা। তবে স্বামী শরীয়ত বিরোধী কোন কাজ করতে বললে অপারগতা প্রকাশ করা
২) স্বামীর সামর্থ্যের অতিরিক্ত কোন বিষয়ে তার প্রতি চাপ সৃষ্টি না করা
৩) অনুমতি ছাড়া স্বামীর সম্পদ ব্যয় না করা
৪) স্বামীর আত্মীয় ও আপনজনদের সাথে এমন ব্যবহার না করা যাতে তার মনে কষ্ট হয় (হুকুকে মুআ’শারাত, আশরাফ আলি থানভী: ৬৫,১১০,১১১)
ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া কিতাবের দ্বিতীয় খন্ডের ২১৮ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, স্ত্রী তার বরকে তুমি না বলে বরং আপনি বলে সম্বোধন করবে, কারণ আপনি বলে সম্বোধন করাতে বরের প্রতি মহব্বতের পাশাপাশি সম্মানও প্রকাশ পায়! কোরআনের সূরা আল বাকারার ২২৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “পুরুষদের রয়েছে তাদের (নারীদের) উপরে শ্রেষ্ঠত্ব।”
ইসলাম কি নারীদের চাকরি করা বা টাকা রোজগার করার অনুমতি দেয়? চলুন ফতোয়ার কিতাব থেকে দেখে নিই। ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া কিতাবের একটি ফতোয়া এমন : “বিবাহের পূর্বে মহিলাদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তার পিতার উপর। পিতা না থাকলে বড় ভাই বা অন্যান্য গার্জিয়ানদের উপর, আর বিবাহের পর তার স্বামীর উপর। তাই নিজের পায়ে দাঁড়ানো বা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মহিলাদের ভবিষ্যৎ চিন্তার প্রয়োজন নেই, কারণ আল্লাহ তাআলা এটা বহু পূর্বেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তবে যদি কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি না থাকে অথবা থাকা সত্ত্বেও দেখাশোনা করে বা করতে না পারে তখন নিজের চলার জন্য এমন কোন পেশা গ্রহণ করতে পারে যেখানে শরয়ী পর্দা লঙ্ঘিত হয়না। যেমন নূরানী মুয়াল্লিম ট্রেনিং নিয়ে বাড়িতে বসে মহিলাদের তালিম দেওয়া, হাতের কাজ করা ইত্যাদি। অনেক ভদ্রমহিলা এখন এভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন, কিন্তু হাইস্কুলের ছেলেমেয়েদের সহশিক্ষা দেয়া হয় এবং পুরুষ ও মহিলা উভয় ধরনের শিক্ষক সেখানে থাকেন যা শরয়ী ফরজ পর্দা লঙ্ঘন করে সেখানে চাকরি গ্রহণ করার কোন অবকাশ নেই। আর যদি এমন কোন স্কুল পাওয়া যায় যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলেই পর্দাকারিনী মহিলা সেখানে যেহেতু বেপর্দা হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই কাজেই এ ধরনের কর্মস্থলে পর্দার পাবন্দী করে চাকরি গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই [প্রমাণ : সূরা নূর ৩১, সূরা বাকারা ২৩৩, সূরা আহযাব ৩৩, সূরা মায়িদা ২, মিশকাত ২/২৬৯, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা ২:৩৩৮, মাআরিফুল কুরআন ৭:১৩৫, ফাতাওয়া রাহীমিয়া ৪:৯৪, থ্যে
নারীদেরকে ইসলাম সদা ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে বলেছে, অর্থাৎ সোজাকথায় সার্বক্ষণিক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা। একান্ত প্রয়োজনে বাইরে বেরোতে চাইলে শরীয়তের বিশেষ শর্ত ও বিধি মেনে ঘরের বাহিরে বের হওয়ার অনুমতি আছে। কোরআনের সূরা আল আহযাবের ৩৩ নম্বর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে নারীদের ঘরে অবস্থান করতে, এবং সাজসজ্জা করে বাহিরে ঘুরে বেড়াতে কঠোর ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে।
ইসলাম নারীর জন্য কি ধরনের প্রয়োজনে বাহিরে যেতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে চলুন সেটিও দেখে নেয়া যাক। বলে রাখা ভালো, শপিং করতে যাওয়া এমনকি বোরকা পরিধান করে বরের সাথে শপিংয়ে যাওয়াকেও ইসলাম প্রয়োজন হিসেবে বিবেচনা করেনি, তাই শপিং করতে যাওয়ার জন্য নারীকে ঘরের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। কারণ শপিংয়ে যাওয়াটা নারীর সার্বক্ষণিক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার চরম লঙ্ঘন।
ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়ার ২৫৬ নম্বর পৃষ্ঠায় ফতোয়া দেয়া হয়েছে এভাবে, “মহিলাদের দ্বীনদারী টিকিয়ে রাখার জন্য অর্থাৎ দুনিয়া ও আখেরাতের উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তাদের কর্তব্য হলো সর্বদা গৃহাভ্যন্তরে থাকা, বাইরে না যাওয়া। তবে একান্ত প্রয়োজনে মাহরামের সাথে পর্দার সাথে বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে। মহিলাদের শুধুমাত্র জিনিসপত্র পছন্দ করার জন্য স্বামীর সাথে মার্কেটে যাওয়ার অনুমতি শরীয়তে নেই, কেননা প্রথমত শরীয়ত মহিলাদেরকে যে প্রয়োজনে তার ভিত্তিতে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে এটা সে প্রয়োজনের আওতায় পড়েনা। কারণ প্রয়োজন থাকার অর্থ এমন জরুরত যে জরুরতের কারণে বাড়ির বাইরে বের না হলে বিশেষ অসুবিধা বা অস্বাভাবিক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। শুধু পর্দা করলেই মহিলাদের বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েজ হয় না, বরং প্রথমে বিশেষ জরুরত হতে হবে তারপর পর্দা সহকারে বের হওয়া জায়েজ হবে।”
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ইবনে তাইমিয়া বলেছেনঃ কোন স্ত্রী তার বরের অনুমতি ছাড়া বাহির বাড়ির বাহিরে বের হলে সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অবাধ্য হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এই অপরাধের কারণে সে পাপী হবে ও শাস্তি পাবার উপযুক্ত হবে।
(يُؤكّد ابن تيمية وعلماء آخرون أنّ خروج المرأة من بيتها دون إذن زوجها يجعلها عاصيةً لله ولرسوله تستحقّ عليه الإثم والعقاب)
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতির কাছে ফতোয়া চাওয়া হয়েছিল, কোন নারী কি তাঁর বরের অনুমতি ছাড়া নিজ পরিবারের কাছে যেতে পারবে অথবা তাঁর নিজের কোন প্রয়োজনে বরের অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে পারবে? গেলে পাপ হবে কিনা?
উত্তরে ফতোয়া গ্রান্ড মুফতি শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায লিখেছেন :
ليس لها الخروج الا باذن زوجها، يحرم عليها ان تخرج الا باذن زوجها ولو كانت في تعزية لأهل ميت او عيادة المريض او لاهلها ليس لها الخروج الا باذنه، عليها السمع والطاعة
অর্থাৎ, কোনক্রমেই বরের অনুমতি ছাড়া স্ত্রী ঘর থেকে বেরোতে পারবে না। তার জন্য বরের অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া হারাম হবে, যদিও সেটা কোন মৃতের পরিবারেক সান্ত্বনা দেয়ার প্রয়োজনে হয় অথবা অসুস্থের সেবা করার প্রয়োজনে হয়, এমনকি নিজের পরিবারের সাথে কোন প্রয়োজনীয় কাজ থাকলেও স্ত্রীর জন্য বৈধ নয় বরের অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া। স্ত্রীর জন্য তার বরের কথা শোনা এবং আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য।
নারী কি একান্ত প্রয়োজনে চাকরি করতে পারবে?
ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়ার দ্বিতীয় খন্ডের ২৫৯ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা আছে : “শরীয়তের মূলনীতির আলোকে নারীর জন্য পরপুরুষের সাথে অফিস-আদালতে, কোর্ট-কাচারিতে চাকরি করা একেবারেই গর্হিত এবং নাজায়েজ কাজ‌। তাছাড়া এর দ্বারা পর্দাপ্রথা যা শি’আরে ইসলাম এবং একটি ফরয আমল তারও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। এছাড়াও আরো বিভিন্নভাবে শরয়ী আহকাম লঙ্ঘিত হয়। এসব কারণেই মেয়েদের জন্য পরপুরুষের সঙ্গে কাজ করতে হয় এমন কোনো চাকরি করা নাজায়েজ।”
ইসলাম নারীর সামনে পোশাক-আশাক ও চলাফেরায় যে পরিমাণ ব্যারিকেড ও বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছে তাতে করে একজন নারী তার নিজের মধ্যেই গুটিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এত বিধিনিষেধ মেনে একজন নারী এমনিতেই ঘর থেকে বেরোতে চাইবে না।
মুসলিম নারীর জন্য পোশাক-আকাশের ইসলামিক ব্যারিকেড কি কি চলুন জেনে নেয়া যাকঃ “মেয়েদের জন্য বেগানা পুরুষ তথা যাদের সঙ্গে বিবাহ বৈধ তাদের সামনে সম্পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখা ফরজ, তবে একান্ত প্রয়োজনে মুখমন্ডল ও পায়ের পাতা খোলার অনুমতি আছে। বর্তমানে ফিৎনার জামানা হওয়ার কারণে দুই হাতের কব্জি, পায়ের পাতা, চেহারা ইত্যাদিও ঢেকে রাখা জরুরি। বিনা প্রয়োজনে গাইরে মাহরামদের সামনে মুখমণ্ডল কব্জি ও পায়ের পাতা খোলা নিষেধ” (ইমদাদুল ফতোয়া ৪/১৯৭) হানাফি মাজহাবের (যে মাজহাবের অনুসারী ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সব মুসলিম) অন্যতম প্রসিদ্ধ ফতোয়া গ্রন্থ আদদুররুল মুখতার কিতাবে লেখা রয়েছে :
وتمنع المرأة الشابة من كشف الوجه بين رجال، لا لانه عورة بل لخوف الفتنة
অর্থাৎ: যুবতী মেয়ের চেহারা পুরুষদের সামনে খুলতে বাধা দিতে হবে। এটা এজন্য নয় যে এটি সতরের অন্তর্ভুক্ত, বরং ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য (আদদুররুল মুখতার ১/৪০৫)
উপরোক্ত ইসলামী শরিয়া আইনের সিদ্ধান্তসমূহ দেখার পর আমরা কি এটা বুঝতে পারি না যে, ইসলাম একজন নারীর সামনে যে পরিমাণ বেড়া দিয়ে রেখেছে সেটি অতিক্রম করে কোন নারীর পক্ষেই চাকরি করা সম্ভব না? আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের সিনেটর ইলহান ওমরের মতো হিজাব পরে রাজনীতি করা কিংবা হিজাব ইজ মাই চয়েজ বলে রাস্তার মোড়ে প্ল্যাকার্ড বহন করা এসব তো ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন করে না। নারীকে ইসলাম মনে করে শস্যক্ষেত্র, যার মধ্যে শস্য হিসেবে উৎপন্ন হবে অগণিত ইসলামিক সন্তান (সুরা আল বাকারার আয়াত ২২৩ দেখুন)। ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ নারীদের সম্পর্কে পুরুষদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তোমরা বেশি করে অধিক মহব্বতকারী এবং সন্তান দানকারী নারীদের বিয়ে করো, কেননা আমি কেয়ামতের দিন আমার অধিক সংখ্যক উম্মত নিয়ে গর্ব করব (বর্ণনায় : আবু দাউদ ও নাসাঈ) । ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ নারী আর পুরুষের মধ্যে এমন পার্থক্য দিয়ে গিয়েছিলেন যে, চৌদ্দশ বছর পরেও মুসলিম নারীরা এই পার্থক্যের বা বৈষম্যের দেয়াল টপকাতে পারেননি। মোহাম্মদ বলেছিলেন :
إذا دعا الرجل امرأته إلى فراشه فأبت، فبات غضبان عليها لعنتها الملائكة حتى تصبح
অর্থঃ “কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে (সহবাস করার জন্য) আর স্ত্রী অস্বীকার করে, আর এজন্য সে ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশতাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে’’ (সহিহ আল বুখারী, হাদিস নং ৩২৩৭)
আমার বুঝে আসেনা মোহাম্মদের আল্লাহ পুরুষের স্বার্থরক্ষায় এত অগ্রগামী কেন? আমার বুঝে আসে না মোহাম্মদের আল্লাহর কাছে নারীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আশা-আকাঙ্ক্ষা এসব কিছুর কোনই মূল্য নেই কেন? কেবলমাত্র ঘরের মধ্যে বসে বসে রান্নাবাড়া করা আর ঘনঘন সন্তান জন্মদান করাই কি ইসলামের উদ্দেশ্য? অবশ্য কথা কিন্তু ভুল না। আপনারা দেখবেন মুসলিমদের হুজুররা প্রায় সময়ই বলেঃ বেশি বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে পৃথিবীটা দখল করে ফেলতে হবে, মুসলমান দিয়ে ভরে ফেলে পৃথিবীটা দখল করতে হবে। বর্তমান বিশ্বের জিহাদি ইসলামের অন্যতম নেতা তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান একবার ইউরোপীয় মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ন্যূনতম পাঁচটি করে সন্তান জন্ম দিতে উপদেশ দিয়েছিলেন। এভাবে যদি পৃথিবীতে মুসলিমদের সন্তানদের কেবল কোয়ান্টিটি বাড়তে থাকে কিন্তু কোয়ালিটি নয় তবে কি আমরা কোন ভালোর আশা করতে পারি? আমরা কি এই জনসংখ্যা-জিহাদের পরিকল্পনায় জন্ম দেয়া শিশুদের দ্বারা একটি সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে পারি? ইসলামের প্রধান দুর্বলতার জায়গা হচ্ছে নারী। নারীকে ঘরে বন্দি করে রাখতে পারলেই ইসলাম থাকবে, আর যেদিন মুসলিম নারীরা জেগে উঠবে যেদিন তাঁরা বুঝতে পারবে ইসলাম তাদের কেবল ঠকিয়েছে, ইসলাম তাদেরকে পুরুষের সেবাদাসী বানিয়েছে সেদিন আর ইসলামের পতন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।
ইসলামপন্থীদের দেখবেন, ১০০ জন পুরুষ ইসলাম ত্যাগ করলে তাঁরা যতটা ভয় পায় একজন নারী ইসলাম ত্যাগ করলে তারচে বহুগুণ বেশি ভয় পায়। একজন নারী ইসলাম ত্যাগ করলেই ইসলামপন্থীদের হাঁটুর কাঁপন ধরে যায়। তাঁরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে – এই বুঝি তাদের তাসের ঘর ভেঙে পড়বে! এই বুঝি তাদের মুখেমুখে কপচানো বুলি ‘ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান’ অসাড় হয়ে পড়বে! এই বুঝি ওঁরা যুগযুগ ধরে নারীর বিরুদ্ধে যে সহিংসতা চালিয়েছে সেটি প্রতিরোধের মুখে পড়বে!

Facebook
Twitter
LinkedIn

আমার গাছে অপরাজিতা ফুটেছে অপরাজিতা নিয়ে একটু স্মৃতিচারণ না করলে মনটা ভরছে না। সেটি ২০০২ সালের কথা, আমি তখন মালিবাগ মাদ্রাসার ছাত্র। মালিবাগ বাজার থেকে খিলগাঁওয়ের দিকে যে রাস্তাটা চলে গেছে তার ডান পাশে ছিল রেললাইন, এবং রেললাইনের পরেই বস্তি যেখানে বাস্তুহারা মানুষদের বসবাস ছিল। ধনীদের বসবাস ছিল এর উল্টো সাইডে, অর্থাৎ রাস্তার বাঁ দিকটায়। বাঁ দিকের রাস্তার ধারের আইল্যান্ড ধরে বিকেলবেলা হাঁটতে বের হতাম। মাদ্রাসার জেলখানার সাথে অন্যান্য জেলখানার পার্থক্য শুধু এটুকুই, মাদ্রাসার জেলখানা থেকে বিকেলবেলা অর্থাৎ আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিবের নামাজের আগ পর্যন্ত সময়টায় বাহিরে বেরোনোর সুযোগ পাওয়া যেত। অবশ্য সময়টা খুবই সংক্ষিপ্ত – আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার মতো। সূর্যাস্তের সময়ে যে অসাধারণ দৃশ্যের তৈরি হয় চারিদিকে, অসাধারণ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয় দূর দিগন্তে সেটি দেখার সৌভাগ্য মাদ্রাসার ছাত্রদের কখনোই হয় না। কারণ সূর্যোদয়ের আগেই তাদেরকে জেলখানায় তথা মাদ্রাসায় ফিরে যেতে হয়। সূর্যাস্তের সাথে সাথে মাগরিবের আজান হয় এবং এরপর নামাজ। একদিন আসরের নামাজের পর সাথে আরো দু’জন ক্লাসমেট ছিল, হাঁটতে বেরিয়েছি। মালিবাগ বাজার ধরে বাঁ দিকটার ফুটপাত ধরে খিলগাঁওয়ের দিকে হাঁটছিলাম। এখন যেখানে খিদমাহ হাসপাতাল হয়েছে তার কাছাকাছি কোন একটা জায়গায় ছোট্ট একটা নার্সারি ছিল; খুবই ছোট জায়গা, খুবই সংকীর্ণ। আমার চোখ আটকে গেল একটি নীল রঙের ফুল দেখে। সাথে সঙ্গী দু’জনকে থামিয়ে দিয়ে আমি সে ফুলের কাছে চলে গেলাম। দীর্ঘ সময় দেখতে লাগলাম। নার্সারির মালিককে জিজ্ঞেস করলাম এই ফুল গাছের নাম কি? তিনি জানালেন – অপরাজিতা। বন্ধু দুজন কিছুটা বিরক্ত হলেও আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে আরও কিছুক্ষণ ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর মাদ্রাসা তথা জেলখানায় ফিরে গেলাম। দিনরাত আমার মাথায় ঘুরতে থাকল অপরাজিতা ফুল, অপরাজিতা ফুল। কয়েকদিন পর যখন বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ছুটি পেলাম তখন সেই নার্সারিতে গিয়ে অপরাজিতা ফুলের গাছ কিনে নিলাম। অবশ্য সেই গাছটি খুব সম্ভবত ছিল না, অন্য একটি গাছ কিনেছিলাম যদ্দূর মনে পড়ে। বাসায় নিয়ে একটি টবের মধ্যে গাছটি লাগিয়ে দিলাম। পরবর্তীতে আমাদের বাসার ছাদের একটা সাইডে ইট-বালু-সিমেন্ট এর প্লাস্টার করে বিশাল একটি জায়গা বানিয়ে সেখানে মাটি ভরাট করে তাতে অপরাজিতা গাছটি লাগিয়ে দিলাম। অনেক অনেক বড় হয়ে গেছিল, অনেক অনেক ফুল হয়েছিল। আজও সেই গাছের কথা আমার মনে পড়ে। ২০০২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত অপরাজিতা ফুলের প্রতি আমার সেই প্রেম আর কমাতে পারিনি। আজও অপরাজিতাকে সেই পরিমাণ ভালোবাসি যেমন ভালবেসে ফেলেছিলাম প্রথম দর্শনে, ২০০২ সালের সেই বিকেলে।

Facebook
Twitter
LinkedIn

বিবাহিতরা কেবল রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগমুহূর্তে চরম সুখী থাকে, আর অবিবাহিতরা কেবলমাত্র রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগমুহূর্তে দুঃখী থাকে। দীর্ঘসময়ের সুখের হিসেব করলে অবিবাহিতরা ভালো আছে, আর চরম (কিন্তু সাময়িক) সুখের হিসেব করলে বিবাহিতরা ভালো আছে।
সিদ্ধান্ত এবার আপনার…

Facebook
Twitter
LinkedIn

ইসলামের নবী মোহাম্মাদের মক্কার জীবন কেমন ছিল জানতে চান?
দেখুন বাংলাদেশের সরকারবিরোধী দলগুলিকে।
মোহাম্মাদের মদিনার জীবন কেমন ছিল জানতে চান?
দেখুন বাংলাদেশের সরকারি দলকে।
প্রতিটি রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় গেলে মাদানী হয়ে যায়, আর ক্ষমতা হারালে মাক্কী হয়ে রয়। মক্কার মোহাম্মদ বারো বছর ধরে একটি মদিনা খুঁজেছেন, ঠিক যেমন বারো বছর ধরে বাংলাদেশের সরকারবিরোধী দলগুলি ক্ষমতা খুঁজছে। মদিনার মোহাম্মদ দশ বছর ধরে তাই-ই করেছেন যা করছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলটি।
মক্কায় থাকলে সবাই গরিবের কথা বলে, যেমনটি মাঝেসাঝে বলতেন
মক্কার মোহাম্মদ। মদিনায় থাকলে সবাই অনুভূতির কথা বলে, যেমনটি
সবসময় বলতেন মোহাম্মদ। অনুভূতি আহত করলে ক্ষমতাসীনেরা তাই করে যা করতেন মোহাম্মদ। তবে তিনি ছিলেন আরেকটু কড়া। তিনি বাংলাদেশের শাসক দলের মত প্রহসনের বিচার করে কারাগারে পাঠাতেন না, বরং ডাইরেক্ট ঘাতক পাঠিয়ে অন দ্যা স্পট সানডে-মানডে ক্লোজ করে দিতেন। মদিনার শাসক মোহাম্মদের অনেক সহমত ভাই ছিলেন যেমনটি আমরা এখন ‘সহমত লীগ’ ভাইদের দেখতে পাই। শাসক মোহাম্মদের বিশেষ বাহিনী আলি লীগ, ওমর লীগ ও আবুবকর লীগ ছিল যার সাযুজ্য আমরা খুঁজে পাই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও বুইড়া লীগে।
মদিনার শাসক মোহাম্মদ যখন পুত্রবধূকে নেকা করলেন, তাঁর অন্যান্য বৌয়েরা বিদ্রোহ করতে চাইল তখন মদিনার মোনাফেকদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। যেহেতু নবীর সমালোচনা মানেই ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করা সেহেতু ষড়যন্ত্রকারীদের ‘অভিশপ্ত’ আখ্যা দিয়ে তিনি তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই ‘কতল’ করার ফরমান জারি করলেন। ঠিক যেমন বাংলাদেশের মাদানী দল তথা ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা – যারা করে তাঁরা মোনাফেক – সুতরাং ওদের পুলিশ দিয়ে ধরার ফরমান তিনি দিতেই পারেন!
তৎকালীন মাদানী দলের প্রধান মোহাম্মদ যেমন নিজের একার হাতে সব সামলাতেন বর্তমান মাদানী দলের প্রধানও তেমনি একহাতে সবকিছু সামলান। মোহাম্মদের অনুসারীরা যেমন আল্লাহু ওয়া রাসুলুহু আ’লামু (আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন) বলত বর্তমান মাদানী দলের অনুসারীরাও তেমনই “নেত্রীর সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত” বলে।
তৎকালীন মক্কাবাসী বিভিন্ন গোত্রকে সাথে নিয়ে আহজাবের যুদ্ধ বা ঘেরাও অভিযান চালিয়ে যেমন ব্যর্থ হয়েছিল বর্তমান মক্কী দলটিও তেমনি বিভিন্ন হুজুরদের একত্র করে শাপলা চত্তর ঘটিয়ে বিফল হয়েছে।
তবুও পার্থক্য আছে – সেই মদিনা আর এই মদিনায় পার্থক্য আছে। তখন জাতিসংঘ ছিল না, এখন আছে। তবে তখন যেমন রোম-পারস্য ছিল এখনও তেমনি আমেরিকা-রাশিয়া আছে। যখন পারস্যের বিরুদ্ধে আয়াত নাজিল হত তখন রোম হাদিয়া পাঠাত মোহাম্মদের জন্য, সেরকম একটি হাদিয়ার নাম মারিয়া আল কিবতিয়া। আবার যখন ইহুদি-নাসারাদের বিরুদ্ধে আয়াত নাজিল হত তখন খুশি হত পারস্য। অবশ্য ইহুদি-বিরোধী আয়াত নামলে রোমান সম্রাটও খুশি হতেন, ঠিক যেমন এখন নোয়াম চমস্কি এবং অরুন্ধতীর কলামে ইসরায়েল-বিরোধী আয়াত নাজিল হলে খুশি হয় পশ্চিমা খ্রিস্টানরা। অবশ্য তৎকালীন রোমান সম্রাট খুশি হতেন ধর্মের দোহাই দিয়ে, আর বর্তমান রোমানরা খুশি হয় বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে। তৎকালীন শক্তিধর রোম-পারস্য মনে করত, মদিনার মূর্খ মোহাম্মদ আমাদের কোন পশমটা ছিঁড়বে! এখনও আমেরিকা-রাশিয়া মনে করে, বিপুল সংখ্যক মূর্খ মুমিনরা আমাদের কি করবে?
ইতিহাসের গতিপথ সবসময় একই রকম থাকে। খিলাড়িরা সবসময় একই রকম খেলে। আমরা কেবল যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ঘুরপাক খেতে থাকি। হাজার বছর ধরে একই খেলা চলছে। একই খেলোয়াড়েরা বংশানুক্রমে খেলছে। মাঝেমাঝে ওরা জার্সি বদল করছে বলে আপনি মনে করছেন, খেলোয়াড় বুঝি বদলেছে, খেলা বোধহয় পাল্টেছে!
আপনি যার বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনিই আপনার খেলারাম – আপনি তাঁর হয়েই খেলছেন। আপনি যার পক্ষে খেলছেন তিনিও আপনার খেলারাম। ওরা A টিম এবং B তৈরি করে আপনাদের দুই ভাইকে দুই দলে ভাগ করে খেলাচ্ছে, আপনারাও খেলছেন। দিনের আলো নিভে এলে দুই খেলারাম নিশ্চিন্তে সুরা পান করে। দুই খেলারামের মাঝখানে লিয়াজো হিসেবে কাজ করছে আপনারই বন্ধু কমল। আবার আপনার ঘোরতর শত্রুরও কিন্তু অন্তরাত্মার বন্ধু ওই কমল! দুজন খেলারাম, আপনারা দুই ঘোরতর শত্রু, আপনাদের উভয়েরই কমন ফ্রেন্ড কমল – খেলাটা কি চমৎকার না?
এবার বলুন, সব দোষ কি এককভাবে মোহাম্মদের? সব দোষ কি বাংলাদেশের মক্কী বা মাদানী দলের? সব দোষ কি আপনার একার? সব দোষ কি আপনার সেই পরম পূজনীয় ব্যক্তির যার কোন সমালোচনা করলেই মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়ে যায়? সব দোষ কি বড় হুজুরের সেই মুরিদের যাকে আপনি “ছাগু” বলেন? আপনি নাস্তিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদের পুজা করলে যদি দোষ না হয় তবে মামুনুলের রূহানী পুত্রের কেন দোষ? নাস্তিকতার জন্য আপনার বড় হুজুরের অবদান যদি সবচে বেশি হয় তাহলে ইসলামের জন্য রুহানী ছেলের বড় হুজুরের অবদান কেন সবচে বেশি নয়? আপনি যদি নাস্তিক হুজুরকে তেলের পেয়ালায় চুবাতে থাকেন তাহলে কেন মুমিন তাঁর নবীজিকে তেলে চুবাবে না? কেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদের সাগরে ডুবানো হবে না?
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ধান ভানতে শিবের গীত গাওয়া আমার পুরানা অভ্যাস

Facebook
Twitter
LinkedIn

ওনারা সিদ্ধান্ত নিলেন, মুসলিমরা তাদের শরিয়া আইন, কুসংস্কার, চার বিবি আর বহু বহু সন্তান নিয়ে থাকুক। মুসলিমরা মাদ্রাসা নিয়ে থাকুক, দাড়িটুপি নিয়ে থাকুক; মুসলিমরা থাকুক কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতা নিয়ে। মুসলিমরা ধর্মান্ধতা নিয়েই পড়ে থাকল। ওনাদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ব্রাহ্মণ্যবাদও এখানে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। ওনারা মনে করেছেন নিম্নবর্ণের লোকেরা (মুসলিমরা) কেন পড়াশোনা করবে? ওরা অশিক্ষিত থাকুক। ওরা দাস হয়ে থাকুক। মুসলিম নারী যখন তাঁর বরের কাছে মার খায়, মুসলিম নারী যখন তাঁর বরের কাছ থেকে মুখের কথায় তালাকের মাধ্যমে বিদায় হয়, মুসলিম নারী যখন তার বরের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্ত্রী মেনে নিতে বাধ্য হয়, মুসলিম নারী যখন অত্যাচারের শিকার হয়ে কান্নাকাটি করে তখন ওনারা বলেন – “ওটা মুসলিমদের নিজস্ব ব্যাপার, ওখানে নাক গলিয়ে লাভ নেই।” মুসলিমদের ধর্মান্ধতা দেখে, উগ্রতা দেখে ওনাদের সন্তানরা এবার “কাউন্টার-মুসলিম” হওয়ার চেষ্টা করল। তাঁরা ইসলামের আদলে হিন্দু শরিয়া আইন তৈরি করার চেষ্টা করল। তাঁরা খেলাফত রাষ্ট্রের আদলে রামরাজ্য কায়েমের স্বপ্ন দেখল। তাঁরা আল্লাহু আকবার এর আদলে “জয় শ্রীরাম” বানালো। তাঁরা এক উম্মাহ ধারণার স্টাইলে এক হিন্দু জাতির ধারণা তৈরি করল। তাঁরা মহররমের তরবারি মিছিলের অনুকরণে রামনবমীর ত্রিশূল মিছিল চালু করল। তাঁরা শূকরের মাংসের হারাম হওয়ার অনুসরণ করে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করল। এখন কেবল একটাই বাকি আছে, আর সেটি হচ্ছে – মুসলিমদের অনুকরণে ওদেরও সুন্নতে খতনা চালু করা। রাজা রামমোহন রায় এবং ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যে সংস্কার আন্দোলন চালু করেছিলেন সেটি যদি ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকত, সেটি যদি কেবল হিন্দু সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে মুসলিমদের মধ্যেও চালু করা যেত, যদি “মুসলিম পুরুষদের সুযোগ দাও ওদের বউদের ওরা পেটাবে” এই ধারণা রাজনীতি কর্তৃক প্রমোট করা না হতো তাহলে হয়তো আমরা অন্য এক ভারতবর্ষ দেখতাম। আপনি অন্য একটা লোককে যদি সমর্থন করেন সে তাঁর সন্তানকে পেটাবে তাহলে কেন আপনি নিশ্চিত থাকেন যে, নিজের সন্তানকে পেটানোর পর সে আপনার সন্তানকেও পেটাতে আসবে না? এবং আপনি যে লোকটাকে তার নিজের সন্তানকে পেটানোর বিষয়টাকে সমর্থন করেছিলেন সেই লোকটাই যখন আপনার সন্তানকে পিটুনি দেবে তখন কোন নৈতিক অবস্থান থেকে আপনি প্রতিবাদ করবেন? আমার আফসোস হয় সেই সমস্ত মানুষদের দেখে যাদের মনের মধ্যে মুসলিমদের প্রতি তীব্র ঘৃণা! আমার আফসোস হয় সেই সমস্ত মানুষদের দেখে যারা মনে করে এক্স-মুসলিম হলে বুঝি হিন্দুত্ববাদের সমর্থন করতে হয়। আমার আফসোস হয় সে সমস্ত মানুষদের দেখে যারা মুসলিমদের ঘৃণা করতে গিয়ে, উগ্র জাতীয়তাবাদের সমর্থন করতে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের অজান্তে কুড়াল মারছে নিজেদেরই পায়ে। এবং এর ফলশ্রুতিতে কি হচ্ছে? রামরাজ্য কায়েমিদের উগ্রতার জবাবে আরেক উগ্রতা তৈরি হচ্ছে – Intellectual ferocity। রামরাজ্য কায়েমিদের উগ্রতার জবাবে যে উগ্রতা তৈরি হচ্ছে সেটি হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক উগ্রতা। একদল বুদ্ধিজীবী তৈরি হয়েছেন এবং একদল রাজনীতিবিদ তৈরি হয়েছেন যারা ওদের দমন করার জন্য জিহাদিদের ব্যবহার করছে। এই বুদ্ধিজীবীরা ওদের রামরাজ্যের স্বপ্নকে বানচাল করার জন্য জিহাদিদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক সাহায্য দিচ্ছে। এভাবেই দুটি পক্ষ দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গেছে – একদল রামরাজ্যের স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, আরেকদল ব্রাহ্মণ্যবাদীদের ঘৃণার জবাবে মুসলিমদের ইসলামিক ঘৃণাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। কখনো কখনো মনে হয় – ওরা ওরাই তো – ব্রাহ্মণে ব্রাহ্মণে লড়াই, মুসলিমদের এখানে কি? না, আমি পরক্ষণেই ভাবি, মুসলিমদের এখানে অনেক কিছু। মুসলিমদের বাঁচাতে হবে। মুসলিমদের বাঁচাতে হবে ইসলাম থেকে, যাতে মুসলিমরা ওদের দ্বারা ব্যবহৃত না হয়। আবার একইসাথে মুসলিমদের বাঁচাতে হবে ওদের হাত থেকে, যাতে ওরা মুসলিমদেরকে ইসলামের কারাগারে বন্দি করে রাখতে না পারে। আপনি যদি ভারতের মুসলিমদের ওদের হাত থেকে রক্ষা করেন তবে অবশ্যই মুসলিমরা ইসলাম ত্যাগ করে মানুষ হবে। আবার যদি মুসলিমদের ইসলাম থেকে রক্ষা করেন তাহলে অবশ্যই মুসলিমরা ওদের রাজনৈতিক তুরুপের তাস আর হবেনা। আমরা যদি মুসলিমদের ইসলাম থেকে বাঁচাতে পারি, আমরা যদি মুসলিমদের ওদের হাতে ব্যবহৃত হওয়া থেকে বাঁচাতে পারি তাহলে হতে পারে ওদের যে প্রজন্ম এখন ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তাদেরই পরবর্তী প্রজন্ম আর ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না। হয়তোবা তাঁরা থেমে যাবে। আমরা যদি হুজুরদের (মোল্লাদের) বাঁচাতে পারি মডারেট মুসলিমদের থেকে তবে জঙ্গিবাদ থমকে দাঁড়াবে। ওনারাই (মডারেট) যে নিজেরা ভদ্রতা আর প্রগতিশীলতার মুখোশ পরে কিন্তু নির্মাণ করে মাদ্রাসা যেখানে শিক্ষাদান জিহাদের, যেখানে মানুষকে বাধ্য করা হয় জঙ্গিবাদী হতে! (প্রিয় লেখক তসলিমা নাসরিনের একটি কমেন্ট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার এই অনুলিখন)

Facebook
Twitter
LinkedIn

শুরু করা যাক একটি গল্প দিয়ে। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় বেড়াতে গেলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই। চীনের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। অনুষ্ঠানে গানও পরিবেশিত হয়েছে। সবার শেষে গান গাইলেন কিংবদন্তি শিল্পী আব্বাসউদ্দীন‌। আর গানটি ছিল “আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দেরে তুই আল্লা মেঘ দে”। গান শেষ হতেই সকলে দেখল বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। সেদিন চৌ এন লাই বলেছিলেন : “হয়তো অনেক কিছুই আমি মনে রাখতে পারব না, কিন্তু যা আমি আজীবন মনে রাখবে তা হলো – একজন শিল্পী কিভাবে গান গেয়ে আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাতে পারেন।” (তথ্যসূত্র : সারেগামা বেঙ্গলি) ইসলাম ধর্মমতে, খুব বেশি খরা ও অনাবৃষ্টি হলে তখন আল্লাহর কাছে বিশেষ ধরণের নামায পড়তে হয় যাকে বলা হয় সালাতুল ইস্তিসকা।

বাংলাদেশের যশোরের এক পীর সাহেবের গল্প বলছি শুনুন। একবার বাংলাদেশে প্রচন্ড খরা দেখা দিল। বৃষ্টি নেই, জমির ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে, গরমে মানুষের জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। লোকজন গিয়ে পীর সাহেবকে বলল, হুজুর আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। পীর সাহেব একদিন ইস্তিসকার নামাজের আয়োজন করলেন। নামাজ হলো, নামাজের নামাজের পর প্রার্থনা করে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি চাওয়া হলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝুপঝুপ করে বৃষ্টি নামল। পীর সাহেবের কেরামতি বেড়ে গেল। লোকজন বলাবলি করল, পীর সাহেবের সাথে আল্লাহর ‘হট কানেকশন’ আছে।

চলুন একটু হাদিসের গল্প শুনে আসি : আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পশুগুলো মারা যাচ্ছে এবং রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট (বৃষ্টির জন্য) দু’আ করুন। তখন তিনি দু’আ করলেন। ফলে এক জুমু’আ থেকে অপর জুমু’আ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হতে থাকল। এরপর এক ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ঘরবাড়ী বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলো মারা যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! পাহাড়ের উপর, টিলার উপর, উপত্যকা এলাকায় এবং বনাঞ্চলে বর্ষণ করুন। ফলে মদিনা থেকে মেঘ এরূপভাবে কেটে গেল যেমন কাপড় ফেড়ে ফাঁক হয়ে যায়। প্রতিটি বিশ্বাসে মুসলিম মনে করে, সেদিন বৃষ্টি নেমেছিল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা তথা নবী মোহাম্মদের প্রার্থনার কারণে।

আমার শৈশবের ঘটনা বলছি শুনুন : ঢাকার হাজারীবাগে একবার বৃষ্টির জন্য নামাজের আয়োজন হয়েছিল। আমি সেখানে আমার বাবার সাথে গিয়েছিলাম। হাজারীবাগ বড় মসজিদের ইমাম নামাজ ও প্রার্থনার নেতৃত্ব দিলেন। সেদিন মানুষের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল, কিন্তু ইসলামের ঈশ্বর আল্লাহর ভান্ডার থেকে বৃষ্টি পাঠানো হল না। যদি বৃষ্টি নামত তাহলে ওই ইমাম সাহেবের পীর সাহেব হয়ে যেতে আর সময় লাগত না। প্রমাণ হয়ে যেত ইমাম সাহেবের সাথে আল্লাহর হট কানেকশন আছে। আমি নিজেও একসময় মসজিদের ইমাম ছিলাম। সে সময়ে ইমামতি করতে করতে এক পর্যায়ে ইসলামের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠলাম। কোরআন-হাদিস ভালোমতো ঘেঁটে বুঝতে পারলাম, কোরআনের সবকিছুই মোহাম্মদের নিজের বানানো। ইসলামের আল্লাহকে মনে হল হিংসুক, প্রতিশোধপরায়ণ, রক্তলোলুপ একজন মানুষ। আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা তাদের রোগব্যাধি ও বালা-মুসিবত ইত্যাদি সারাবার জন্য কিংবা মনের আশা পূরণ করার জন্য মসজিদের ইমামদের কাছে গিয়ে তাবিজ নেয়, অথবা পানিপড়া নেয়। পানিপড়া দেয়ার সময় ইমাম সাহেব ফিসফিস করে কি পড়ে পানিতে ফুঁ দেয় সেটা কিন্তু লোকজন জানেনা। লোকজন কেবল বিশ্বাস করে, ইমাম সাহেব কোরআনের আয়াত পড়েই ফুঁ দিচ্ছেন, আর এ কারণে পড়াপানি খেলে আমার রোগমুক্তি ঘটবে। আমি যখন ইসলামে অবিশ্বাসী অথচ মসজিদের ইমাম সেই সময়েও মানুষকে আমার পানিপড়া দিতে হত। অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি মানুষ সুস্থ হয়ে যাচ্ছে অথচ তখন সময় আমি হরেকৃষ্ণ হরেরাম বলে কিংবা রবীঠাকুরের কবিতার লাইন বলে পানিতে ফুঁ দিতাম। আর সেই পানি খেয়ে লোকজন সুস্থ হত। আমার এক মুসুল্লি (যারা ইমামের পেছনে নামাজ পড়ে তাদের মুসুল্লি বলা হয়) আমাকে বলেছিলেন, “হুজুর, আপনি আল্লাহর ওলী, আপনি পানিপড়া দিলে যত কঠিন রোগ হোক সুস্থ হয়ে যায় মানুষ।”

আবার চলে যাই আব্বাসউদ্দীন প্রসঙ্গে। যারা আব্বাসউদ্দীনের গান ভালোবাসে তাঁরা সবাই জানে, বৃষ্টি নামাতে আব্বাসউদ্দীনের গানের কোন ঐশ্বরিক ভূমিকা নেই। আব্বাসউদ্দীনের গানের কথা শুনে কোন ঈশ্বর বৃষ্টি নামিয়ে দেননি। বৃষ্টিটা প্রাকৃতিক কারণেই হয়েছে। যারা ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদকে ভালোবাসে তারা বিশ্বাস করে, মোহাম্মদের প্রার্থনা আল্লাহ ফেলতে পারেননি তাই তিনি বৃষ্টি নামিয়ে দিয়েছিলেন। বাংলায় একটা কথা আছে, “ঝড়ে বক মরে পীর সাহেবের কেরামতি বাড়ে।” ইসলামের নবী মোহাম্মদের ছিল বহু দূর-দূরান্তের খবর দেয়ার ক্ষমতা। তিনি মক্কায় বসে বসে জেরুজালেমের মসজিদ দেখতে পেতেন। তিনি একরাতেই চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, গ্যালাক্সি, মিল্কিওয়ে, ব্ল্যাকহোল সবকিছু ছাড়িয়ে সাত আসমানের উপরে গিয়ে আল্লাহর সাথে দেখা করে আবার নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছিলেন।

পৃথিবীতে মানুষের সূচনা কিভাবে হয়েছিল, মানুষের মৃত্যুর পর কি হবে এইসব খবর ছিল তার নখদর্পণে। তিনি হাতের ইশারা দিয়ে চাঁদকে দুই টুকরো করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এই মানুষটিই জানতে পারলেন না যে, তিনি যে খাবার খাচ্ছেন তার মধ্যে বিষ মেশানো আছে, আর সেই বিষের ক্রিয়ায় তিনি আক্রান্ত হন‌। এক বছরের অধিককাল বিষের ক্রিয়ায় ভুগে অবশেষে তিনি মারা গেলেন। চলুন বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত আরেকটি গল্প বলা যাক : এক পীর সাহেবকে তার মুরিদ (ভক্ত) নিমন্ত্রণ করেছেন নিজ বাড়িতে। পীর সাহেব সেখানে গিয়ে অত্যন্ত স্বয়ম্ভরতার সাথে আসন গেড়ে বসলেন। ভক্তি গদগদ ভক্ত তাকিয়ে আছে পীর সাহেবের মুখপানে। হঠাৎ পীর সাহেব বললেন, “এখানে তুই কি করছিস? যা, যা বলছি তাই!” ভক্ত পীর সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন, হুজুর, কাকে তাড়ালেন? পীর সাহেব বললেন, আমি দিব্যদৃষ্টিতে দেখলাম মক্কা শরীফের মসজিদের মধ্যে একটি কুকুর ঢুকেছে। কুকুরটিকে তাড়িয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর পীর সাহেবকে খাবার দেয়া হলো। বড় একটি প্লেটে ঠেসে ভাত দেয়া হয়েছে। অনেকক্ষণ হয়ে গেল তরকারি দেয়া হচ্ছে না। শেষমেষ পীর সাহেব বললেন, আরে তরকারি দিচ্ছ না কেন? নিরস কন্ঠে ভক্ত বললেন, হুজুর আপনি এখানে বসে হাজার হাজার মাইল দূরের মক্কা শরীফে কি ঘটছে তা দেখতে পাচ্ছেন কিন্তু আপনার ভাতের তলে যে মাছ-মাংস লুকিয়ে রেখেছি সেটা দেখতে পেলেন না? ভারতে যদি কোন ভূমিকম্প হয় তাহলে বাংলাদেশের বিশ্বাসী মুসলিমরা সেটাকে আল্লাহর গজব (ক্রুদ্ধ হয়ে শাস্তিদান) মনে করে। কিন্তু যদি ভূমিকম্পটি মুসলিম প্রধান পাকিস্থানে হয় তাহলে সেটা আল্লাহর পরীক্ষা! ইসলামের নবী মোহাম্মদের জীবনের শেষ ১০ বছর ছিল যুদ্ধ আর রক্তপাতে ভরা। মুসলিমরা কোথাও যুদ্ধ করতে গেলে যুদ্ধের পরপর সংশ্লিষ্ট যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে কোরআনের আয়াত নাযিল হত। মুসলিমরা জয়লাভ করলে ইসলামের ঈশ্বর আল্লাহ কোরআনে বলতেন – আমি সাহায্য করেছি তাই তোমরা জিতেছ। মুসলমানরা পরাজিত হলে ইসলামের ঈশ্বর আল্লাহ বলতেন – আমি তোমাদের ঈমানের পরীক্ষা নিলাম। কোরআনের সূরা আলে ইমরানের (সূরা নাম্বার ০৩) ১২৩ নম্বর আয়াতে আছে : “আল্লাহ তোমাদেরকে বদর প্রান্তরে (বদরের যুদ্ধে) সাহায্য করেছিলেন যখন তোমরা ছিলে দুর্বল। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর যাতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।” বদর যুদ্ধের একবছর পরেই যখন ওহুদের যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে মুসলিমরা পরাজিত হয় তখন আল্লাহ ভোল পাল্টে ফেলেন। তিনি তখন বলেন : “যেদিন দুই দল (মুসলিম এবং অমুসলিমরা) মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল সেদিন তোমাদের যাক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ছিল আল্লাহরই নির্দেশক্রমে আর আল্লাহ জানতে চেয়ে ছিলেন বিশ্বাসিদের তিনি আল্লাহ জানতে চেয়েছিলাম বিশ্বাসী এবং কপটদের (মধ্যেকার ফারাক)….” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৬৬-১৬৭) আপনি যদি কোন পীরের কাছে গিয়ে আপনার কোন অসুবিধার কথা কিংবা আপনার মনোবাঞ্ছার কথা জানান আর পীর সাহেব যদি দোয়া করে দেন, এবং দোয়া করা সত্ত্বেও যদি আপনার অসুবিধা দূর না হয় কিংবা মনোবাঞ্ছা পূরণ না হয় তাহলে দোষটা কিন্তু আপনার! আপনার ঈমানে দুর্বলতা ছিল। পক্ষান্তরে যদি আপনার অসুবিধা দূর হয় কিংবা মনোবাঞ্ছা পূরণ হয় তাহলে কৃতিত্ব কিন্তু হুজুরের, কারণ তাঁর দোয়া এখানে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে। অবশ্য ওহাবী হুজুররা পীর সাহেবদের তেমন কৃতিত্ব দিতে নারাজ। তাঁরা সব কৃতিত্ব দিতে চায় আল্লাহকে। ঘুরেফিরে সেই একই কথা – আল্লাহ হচ্ছেন সেই ঠুঁটো জগন্নাথ যার অস্তিত্বই নেই, আর পীর হচ্ছেন ঠুঁটো জগন্নাথের সেক্রেটারি যিনি নাম ভাঙিয়ে পয়সা খান। এই প্রশ্নগুলো করা যেতে পারে কিনা যে, মোহাম্মদের প্রার্থনায় যদি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে তাঁর কেন যুদ্ধ করে ইসলাম কায়েম করতে হলো? তিনি কেন প্রার্থনা করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারলেন না? মোহাম্মদের দাবি যদি তথাকথিত আল্লাহ ফেলতে না পারেন তাহলে দেশপ্রেমিক মোহাম্মদের কি উচিত ছিল না তাঁর দেশে যেন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় সে জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যাওয়া? আমি জানিনা, মোহাম্মদের কি দেশপ্রেমের ঘাটতি ছিল নাকি মোহাম্মদের প্রার্থনা শুনতে আল্লাহর অনীহা ছিল? আল্লাহ যদি তার নবীকে এতই ভালোবাসেন তাহলে নবীর দেশে কেন পর্যাপ্ত পরিমাণে তিনি বৃষ্টি দেননা? নবীর দেশে কেন সারাবছর প্রবাহিত থাকে এমন একটি নদী নেই? আল্লাহ যদি তার নবীকে এতই ভালোবাসেন তাহলে নবী আসার পর নবীর দেশকে কেন আল্লাহ সবুজ-শ্যামল, সুজলা-সুফলা করে দেননি? আল্লাহ যদি তার নবীকে এতই ভালোবাসেন তাহলে কেন নবীর আগমনের পর উষর মরুভূমির দেশটির তীব্র তাপদাহ কমিয়ে দেননি? যে নবী দুনিয়াতে বসে চাঁদকে দ্বিখন্ডিত করতে পারে সে নবী কি তার দেশের জন্য প্রতিবছর পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করে যেতে পারলেন না? কখনো কি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে দেখেছেন হে বিশ্বাসী বন্ধু?

Facebook
Twitter
LinkedIn

আবদুল্লাহ আল মাসুদ: আমরা সকলে জানি, রাহমাতাল্লিল আলামীন ছিলেন চরম মানবতাবাদী। তার দিল ছিলো মারাত্মক কোমল ও পরিষ্কার!
আল্লাহর চাপে পড়ে তিনি এমন অনেক কাজ করেছেন যা তিনি কখনো করতে চাননি। আসুন দয়ার নবীর এমন কিছু কষ্টদায়ক কাজের কষ্টের ভাগিদার আমরাও হই –

(১) শিশুকাম: দয়ার নবী কখনো চাইছিলেন না শৈশব হতে চাচা ডেকে আসা শিশু আয়েশাকে বিছানায় নিতে, কিন্তু আল্লাহ তাঁকে স্বপ্নযোগে আয়েশাকে বিয়ে করার আদেশ করার কারণে একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি আয়েশাকে নিকাহ করেন। বলা হয়ে থাকে, আয়েশাকে বিয়ের রাতে তিনি প্রচুর কেঁদেছিলেন। শিশুর সাথে সহবতের হুকুম দেয়ার কারণে আল্লাহর সাথে অভিমানও করেছিলেন! শোনা যায়, শিশুবউ আয়েশার সাথে তিনি প্রথমদিকে মুফাখখতাত (রানের চিপায় ঘষাঘষি) করতেন, পরে আল্লাহর ধমকে সঠিক জায়গায় ঈমান স্থাপন করেন!

(২) পুত্রবধূ কাম: জয়নবের সৌন্দর্য দেখে তিনি বিমোহিত হলেও তিনি কখনো চাইছিলেন না পুত্রবধূকে নিজবধূ বানাতে। আল্লাহ তাঁকে প্রথমে স্বপ্নযোগে নির্দেশ দিলে তিনি তা মানলেন না। অবশেষে আল্লাহ আয়াত নাজিল করে ধমক দিয়ে বললেন জয়নবকে বিয়ে করতে! এমনকি এ-ও জানালেন যে, নবীজির সাথে জয়নবের নেকাহ স্বয়ং আরশে মহল্লায় ফেরেশতাদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে, ফেরেশতারা মরণচাঁদের মিষ্টি দিয়ে মিষ্টিমুখও করেছে!

(৩) জেনোসাইড অব বনু কুরাইযা: বনু কুরাইযাকে হত্যা করতে কখনো তিনি চাননি, সা’দ বিন মুআযের রায়ে আল্লাহর আদেশে তাদেরকে হত্যা করতে বাধ্য হন তিনি। পিতৃহারা, স্বামীহারা, ভ্রাতৃহারা সাফিয়ার সাথে তিনি সে রাতে সহবতও করতে চাননি; কিন্তু আল্লাহ ধমক দিয়ে বললেন – “সহবত তোমার করতেই হবে, নইলে নবুওয়ত কেড়ে নেব!”
অবশেষে কাঁদতে কাঁদতে তিনি সাফিয়াকে ঘরে নিয়ে গেলেন। কান্না মোটে থামছিল না, হেঁচকি দিয়ে তিনি কাঁদছিলেন । সাফিয়া জিজ্ঞেস করলো – কি হয়েছে হে নবী? তিনি সবকিছু খুলে বললেন, আল্লাহর স্বৈরাচারী আচরণের কথাও বললেন। তাঁর দুঃখ এবং কান্না দেখে সাফিয়া নিজেই নিজের কাপড় খুলে দিলেন! নবীজি তখন কেঁদেকেঁদেই সাফিয়ার সাথে সহবত করলেন (দয়ার নবী বলে কথা!)

(৪) বনু নযীরের বিতাড়ন: বনু নযীরকে তিনি তাড়াতে চাননি, কিন্তু এখানেও আল্লাহ তার প্রিয়নবীকে চাপ প্রয়োগ করেছেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় সূরা হাশরে (সূরা নম্বর ৫৯)। বনু নযীর যখন তাদের বাড়িঘর, গবাদিপশু, ভূমি ফেলে চলে যাচ্ছিল আর কাঁদছিল তখন দয়ার নবী নিজেও তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি!
আল্লাহ তাকে ইহুদীদের দুখে কাঁদতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি তবুও কেঁদেছেন, কাঁদতে কাঁদতে সংজ্ঞাহীনও হয়েছিলেন!
রাগ করে নিষ্ঠুর আল্লাহর সাথে তিনদিন কথা বলেননি দয়ার নবী।

(৫) উরাইনার হত্যাকান্ড: উরাইনা গোত্রের লোকদেরকে তিনি শুধু ফাঁসি দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আল্লাহ এতে অতি ক্ষুব্ধ হলেন। আল্লাহ ফরমান জারি করলেন – তাদের হাত, পা, চোখ কেটে ফেলতে এবং মরুভূমিতে শুইয়ে পানি না দিয়ে হত্যা করতে!
আল্লাহর নির্দেশে নবী এটা করলেও তিনি তখন উরাইনার কষ্ট দেখে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে কেঁদেছেন। চল্লিশ দিন পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস থেকেও বিরত ছিলেন আল্লাহর সাথে রাগ করে, সে রাগ ভাঙাতে আল্লাহরও অনেক বেগ পেতে হয়েছে!

(৬) কাব, আবু রাফে, আসমা বিনতে মারওয়ান সহ বহু কবিকে হত্যা করা: “কবি-সাহিত্যিক দেশের সম্পদ, তারা আমার একটু বিরোধিতা করলে কি-ইবা আসে যায়?” এভাবে বারবার আল্লাহর সাথে আর্গুমেন্টে জড়িয়ে যান তিনি, কিন্তু আল্লাহ নাছোড়বান্দা – ওদের হত্যা করতেই হবে, ফরমান জারি করলেন! এমনকি এ হুমকিও দিলেন, “কবিদেরকে হত্যা না করলে মদিনার সবাইকে ওহুদ পাহাড় চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হবে!”
অবশেষে হাজারো মানুষের জীবন বাঁচাতে তিনি কবি-সাহিত্যিকদেরকে হত্যা করান।

(৭) ডজনখানেক বিয়ে: এ কাজ তিনি মোটেই নিজের ইচ্ছায় করেননি, সম্পূর্ণ আল্লাহর চাপের কারণে করেছেন! আগে এক বুড়ি দিয়েই যার সাধ মিটত সে কিভাবে এতগুলো সামলায়! এটা কি খোদার কুদরত নয়?
কথিত আছে, নবীপাক একরাতে নিজ জামাতা আলির বোনের সাথে ‘মিরাজ’ করছিলেন, তখন আল্লাহ তাঁকে ত্রিশ হর্সপাওয়ার দান করেন এবং একডজন নিকাহ করার আদেশ করেন! নবীপাক আল্লাপাককে বললেন – আয় আল্লাপাক, এত বেশি শাদি করলে তো আমার উম্মত আমাকে লুচ্চা বলবে!
আল্লাপাক ফরমাইলেন – “তুমি চিন্তা কোরোনা, তোমার উম্মতও সকলে লুচ্চা হবে, তাদের দন্ডের ভয়ে মুমিনারা সব বোরকার তলে লুকাবে!”

(৮) দাসী সহবত: দাসী সহবতে তিনি বরাবরই অনীহ ছিলেন, আল্লাহ এখানেও নাক গলালেন। নবীর স্ত্রীরাও তার এত ‘কামে’ বিরক্ত ছিলেন, তখন স্ত্রীদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আল্লাহ সূরা আহজাব ও সূরা তাহরীম নাজিল করলেন। মারিয়া কিবতিয়ার সাথে সহবতকালীন সময়ে যখন হাফসার হাতে তিনি ধরা পড়লেন তখন হাফসা দিল রামধোলাই। রামধোলাই দেয়ায় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন, হাফসাকে সতর্ক করেন, হাফসার বাবা ওমর তখন হাফসাকে শাসিয়ে যায়।